রান্নার ধরন
আমার রান্না সাধারন। ভারতবর্ষে থাকতে পাস্তা করতাম, দোকান থেকে চীজ কিনে আনতাম। এমনকি সসেজও খেতাম আমি আর আমার বন্ধু মিলে
আমার রান্না সাধারন। ভারতবর্ষে থাকতে পাস্তা করতাম, দোকান থেকে চীজ কিনে আনতাম। এমনকি সসেজও খেতাম আমি আর আমার বন্ধু মিলে। ইউরোপে এসে ইউরোপীয়ান খাবার বাড়িতে বানানোর কথা কখন মনে হয়নি, দোকানে যা পাওয়া যায়, সেটা খেয়ে বাড়িতে বানাতে লজ্জা করবে ভেবে চেষ্টাও করিনি। কিন্তু যখন স্যালাড দিয়ে ডোনার কাবাব খেয়ে খেয়ে দেখলাম হামবু্র্গ শহরে আর কোন দোকান বাকি নেই, তখন মনে হল তাহলে এবার রান্না করাই যাক। জার্মান কড়াই খুন্তি কিনে আনলাম, কিন্তু রান্না যে জানিই না!
বেশিরভাগ রান্না হয় তাপ দিয়ে; যদি কোন ভাবে খাবার মেটেরীয়ালটা বেশ গরম করে নেওয়া যায় তেল জল দিয়ে, তাহলেই রান্না হয়ে যায় এটা বুঝলাম। আর সাথে যদি একটু ধনে, লংকা, নুন, লেবুর-রস দেওয়া যায়, তাহলেই জম্পেশ করে খাওয়া যায়। আর নারকোলের দুধ দিলে তো কথাই নেই! আমি নীরামিষ খাই বড়িতে, তবে ল্যাবরেটরিতে তৈরীকরা মাংসও দিয়ে দেই খাবারে। আসল মাংসের মত সুস্বাদু না হলেও, মাংস হিসাবে বেশ মানানসই। একটু প্যানে ভেজেনিন নুন লেবু পেয়েজ সমেত, আপনার তরকারি রেডি!
বাড়িতে আমার একটা ওভেন আছে, সেটায় বেগুনপোড়া বানান শুরু করলাম কয়েক বছর আগে। কদিন বেগুন পুড়িয়ে বুঝলাম, ওভেনটায় আর অনেক কিছু করা সম্ভব; ফুলকপি রোষ্ট করা শুরু করলাম, সাথে একটু লেবু, একটু ধনে। একটা গোটা ফুলকপি রোষ্ট প্লেটে পরিবেশন করলে প্রায় rotisserie-মুরগির মতই দেখতে লাগে যা দেখলাম দুর থেকে। খেতে খেতে একদিন মনে হল, ছোলার ডালে ফুলকপি দিলে কেমন হয়!
ছোলা এখানে যা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে ডাল বানান মুশকিল; তাই ভুট্টার দানা দিয়ে ডাল করার চেষ্টা করলাম কদিন। হল না, ভবলাম বীন এত পাওয়া যায়, বীন দিয়ে ডাল করা যায় যদি! ডাল শেষমেশ আর হল না, কিন্তু মাশরুম যে তেল ছাড়া ভাজা করা যায় সেটা জানতে পারলাম। একদিন জেমী অলিভারের ইউটিউব দেখতে দেখেতে মনে হল, মাশরুমের মুগডাল বানালে কেমন হয়। হয়না ভাল জানতে পারলাম!
রান্না আমি শিখিনি, কিন্ত রান্না করতে আমার ভাল লাগে। কিছু জিনিস থেকে খাবার মত একটা কিছু তৈরী করলে প্রায় ম্যাজিকের মত লাগে, মনে হয় রান্নাঘর, নাকি ল্যাবরেটরি। আর খিদে পেটে খাবার ফুটিয়ে নিয়ে প্রচন্ড ঝাল দিয়ে দিলে ভাল খারাপ সব রান্নাই খাওয়া যায় যা বুঝলাম, সাথে একটু লেবু, একটু ধনে।